শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ০৫:০১ পূর্বাহ্ন
বরিশাল: বরিশালের উজিরপুরে হত্যা মামলায় নারী আসামিকে রিমান্ডে এনে যৌন ও শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় পুলিশের বিভাগীয় তদন্তের সময় আরও সাত দিন বাড়ানো হয়েছে। বুধবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার শেষ দিন ছিল।
বরিশাল রেঞ্জ পুলিশের ডিআইজি এস এম আক্তরুজ্জামান বুধবার বিকেলে জানান, অভিযোগ তদন্তের জন্য কারাবন্দি ওই নারীর (ভিকটিম) বক্তব্য গ্রহণ করতে হবে। ওই নারীর সঙ্গে তদন্ত কমিটির সদস্যরা যেন কথা বলতে পারেন, সে জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে। এ জন্য তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে আরও সাত দিন সময় বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
২৬ জুন বরিশালের উজিরপুর উপজেলার জামবাড়ি এলাকা থেকে বাসুদেব চক্রবর্তী নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই বরুণ চক্রবর্তী সেদিনই হত্যা মামলা করেন।
এই মামলায় এক নারীকে ২৬ জুন গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশের পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৩০ জুন বরিশালের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের উজিরপুর আমলি আদালত ওই নারীকে দুই দিনের রিমান্ডে পাঠায়।
রিমান্ড শেষে গত শুক্রবার তাকে আদালতে তোলা হয়। এ সময় তিনি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছিলেন। এর কারণ জানতে চান বিচারক মাহফুজুর রহমান। তিনি আদালতকে জানান, রিমান্ডে পুলিশ তাকে শারীরিক ও যৌন নির্যাতন করেছে।
পরে আদালত নারী কনস্টেবল দিয়ে তাকে পরীক্ষা করে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পায়।
আদালত তাকে চিকিৎসা প্রদান এবং নির্যাতনের বিষয়ে সিনিয়র জেল সুপারের তত্ত্বাবধানে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেন শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালককে।
একই সঙ্গে বিষয়টি তদন্ত করে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণের জন্য পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেয়া হয়।
আদালতের নির্দেশের পর রোববার অভিযোগ তদন্তে রেঞ্জ ডিআইজি এস এম আখতারুজ্জামান রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের পুলিশ সুপার কাজী মো. সোয়াইব আহমেদকে প্রধান ও জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফরহাদ হোসেনকে সদস্য করে দুই সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেন। কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল।
এদিন রাতে উজিরপুর থানার তৎকালীন পরিদর্শক (তদন্ত) ও হত্যা মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা মো. মাইনুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল আহসান, উজিরপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপারসহ অজ্ঞাতপরিচয় তিনজনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করেন ওই নারী।
পরদিন সোমবার সকালে পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাইনুল ইসলাম এবং ওসি জিয়াউল আহসানকে উজিরপুর থানা থেকে প্রত্যাহার করে বরিশাল জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়।
এর আগে শনিবার শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ওই নারীর শারীরিক পরীক্ষার প্রতিবেদন আদালতে জমা দেন।